এতে পরিবেশের বিপর্যয়ের আশংকা করছেন মেঘনা নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা।
গেল শুক্রবার রাতে আকস্মিক ঝড়ের কবলে বেঙ্গল ইলেক্ট্রনিক্স লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি কোম্পানির তেলবোঝাই ওই ট্যাংকার ডুবে যায়। এতে ট্যাংকারে থাকা অপরিশোধিত তেল মেঘনায় ছড়িয়ে পড়ে।
রঘুরচর গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদী জুড়ে এখন এই তেল ভেসে যাওয়ার চিত্র দেখা যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীর তীরে বেঙ্গল ইলেক্ট্রনিক্স লিমিটেডের ফ্যাক্টরি রয়েছে। সেখানে কোম্পানিটি তেল উৎপাদন করে থাকে।
অপরিশোধিত ওই তেলবোঝাই একটি ট্যাংকার মেঘনায় নোঙরে রাখা হয়। এ অবস্থায় শুক্রবার রাতে ঝড়ের কবলে ওই ট্যাংকার ডুবে যায়। সোমবার রাত পর্যন্ত ডুবে যাওয়া ট্যাংকার উদ্ধার করা হয়নি। এতে ট্যাংকারে থাকা বিপুল পরিমাণ তেল মেঘনায় ছড়িয়ে পড়ে।
তবে বেঙ্গল ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সালামত উল্লাহ দাবি করেন, ট্যাংকারে সামান্য পরিমাণে তেল ছিল। ওই সামান্য পরিমাণ তেল নদীতে ছড়িয়ে পড়েছে।
পক্ষান্তরে রঘুরচর গ্রামবাসী বলছেন, ট্যাংকারটিতে তেল ভর্তি ছিল। ট্যাংকারটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
ঘটনার চার দিন চললেও নদীর বিভিন্ন অংশে তেল ভাসতে দেখা গেছে। ভাসমান এ তেলের বিষক্রিয়ায় নদীর বিভিন্ন অংশে মাছ মরে ভেসে থাকতে দেখা গেছে। দ্রুত এই তেল অপসারণ না করা হলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আশংকা করছেন তারা।
রঘুরচর গ্রামের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন জানান, শনিবার সকালে নদীতে তারা তেল ভাসতে দেখেন। নদীর কয়েক কিলোমিটার এলাকায় পানি, ভাসমান কচুরি পানা, নদীর তীর তেলে কালো হয়ে আছে। এ অবস্থায় নদীর পানিতে গোসল বা দৈনন্দিন কাজে এ পানি ব্যবহার করতে পারছেন না তারা।
স্থানীয় জেলে আক্তার হোসেন জানান, এ ঘটনার পর নদীর বিভিন্ন অংশে মাছ মরে ভেসে থাকতে দেখেন তিনি। নদীর এই অংশে আর আগের মতো মাছ পাওয়া যাচ্ছে না।
রঘুরচর গ্রামের জোছনা বেগম জানান, আগে রান্নার কাজে মেঘনা নদীর পানি ব্যবহার করতেন তিনি। তবে নদীর পানিতে ভাসমান তেল থাকায় তা আর এখন ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় রান্নার পানি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গৃহিণীরা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মুক্তার হোসেন জানান, দ্রুত এই তেল অপসারণের ব্যবস্থা না নেয়া হলে এ এলাকার পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এ অবস্থায় বিষয়টির ওপর দৃষ্টি দিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসমিন জেবিন বিনতে শেখ বলেন, বিষয়টি আমি সোমবার অবগত হয়েছি। পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’